মানবিক বিপর্যয়ে তাঁরা অমানবিক দুঃসময়েও পোশাক কারখানায় কর্মী ছাঁটাইয়ের হিড়িক টিইউসির দাবি ১০ দিনে ১৫ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই


নিজস্ব প্রতিবেদক ৯ এপ্রিল, ২০২০

পোশাক কারখানার মালিকরা গত ১০ থেকে ১২ দিনে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি কর্মী ছাঁটাই করেছেন বলে অভিযোগ করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (জিটিইউসি)। সংগঠনটি বলছে, সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও পোশাক খাতের সংগঠনগুলোর শীর্ষ পর্যায় থেকে বারবার শ্রমিক ছাঁটাই না করার আহ্বান জানানো হলেও কারখানার মালিকরা তা মোটেও আমলে নিচ্ছেন না। বরং করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের দেওয়া সাধারণ ছুটির মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো শ্রমিক ছাঁটাই অব্যাহত রেখেছে। এমনকি ছাঁটাইয়ের সময় অধিকাংশ কারখানা বকেয়া মজুরিও দিচ্ছে না।

কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এই সংকট মুহূর্তে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই না করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এর আগে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা হবে না বলে তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বারবার গণমাধ্যমে আশ্বস্ত করেছেন। বাংলাদেশ অ্যামপ্লয়ার্স ফেডারেশন থেকেও ছাঁটাই না করার করার অনুরোধ জানানো হয়।

বুধবার গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সাধারণ ছুটির সুযোগ নিয়ে গতকাল গাজীপুর ও হেমায়েতেপুরে কয়েকটি কারখানায় দুই হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) তথ্য অনুসারে গত ১০ থেকে ১২ দিনে প্রায় ১৫ হাজার কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।’ এই শ্রমিক নেত্রী আরো বলেন, ‘পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মালিকরা যে হারে শ্রমিক ছাঁটাই করছে এতে শ্রমিকরা মজুরি পাবেন কি না এই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।’

বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘গতকাল ১০টি কারখানা শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। এর মধ্যে ব্যাবিলন ক্যাজুয়েল লিমিটেড এক হাজার ৫০০, ভব্স অ্যাপারেলস লিমিটেড ২০০, টর্গ ফ্যাশন ৪০০ ও স্প্যার্টান গার্মেন্টস ২১০ জন শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। তবে এসব কারখানার বেশির ভাগ শ্রমিককে মজুরি দিয়ে আইডি কার্ড রেখে চলে যেতে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পোশাক কারখানার মালিকরা শ্রম আইন মেনে কারখানা লে অফ করতে পারে। এ ছাড়া প্রয়োজনে ন্যায্য মজুরি দিয়ে শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারে। তবে আমরা অনুরোধ করেছিলাম, এমন মানবিক বিপর্যয়ের সময় যেন কোনো কর্মী এই মুহূর্তে ছাঁটাই করা না হয়। বর্তমানে প্রায় সব কারখানা বন্ধ। ৪০টি কারখানায় কাজ চলছে, যারা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করছে।’