২৮-০৪-২০২০
করোনা সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে পোশাক শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রায় ৮০ শতাংশ পোশাক শ্রমিকের হাতেই নেই জমানো অর্থ। এ অবস্থায় নিয়মিত বেতন না পেলে খাদ্য সংকটে পড়বেন বিপুল সংখ্যক পোশাক শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। পোশাক কারখানা শ্রমিকদের নিয়ে চালানো এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।
অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নয়, নিশ্চিত করতে হবে সময় মতো বেতন প্রাপ্তি। সেই সঙ্গে খাদ্য সংকট নিরসনে রেশনিং ব্যবস্থা চালুরও পরামর্শ তাদের।
করোনা ঝুঁকির মধ্যেই সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলেছে। কাজে যোগ দিয়েছেন স্বল্প সংখ্যক শ্রমিক। তবে লকডাউনে বেশিরভাগ শ্রমিক ছুটিতে থাকায় অনিশ্চিত তাদের বেতন। আর যারা কাজে যোগ দিয়েছেন তাদেরও নেই অতিরিক্ত কাজ করে আয়ের সুযোগ।
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার পোশাক কারখানা শ্রমিকদের নিয়ে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, শ্রমিকদের ৯০ শতাংশই কারখানায় কাজ করে অর্থ পাঠাতেন গ্রামের বাড়ি, স্বজনদের কাছে। তবে করোনা মহামারি শুরুর পর তাদের ৭০ শতাংশই বাড়িতে টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ২৭ শতাংশ শ্রমিক নিজেদের খাদ্যের চাহিদা কমিয়েছেন। চলতি মাসের বেতন না পেলে এ সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমন অবস্থায় বিশ্লেষকরা বলছেন, শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি নিশ্চিত করতে হবে শতভাগ বেতন।
জ্যেষ্ঠ গবেষক, বিআইডিএস ডা. নাজনীন আহমেদ বলেন, তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের ঠিক মতো বেতন না হলে টিকে থাকতে পারবে না। কারণ তাদের পূর্বের কোনো সঞ্চয় নেই।
গবেষণা পরিচালক, সিপিডি খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, শ্রমিকদের অতিরিক্ত কাজের যে সুযোগ ছিল সেটি আর থাকবে না। শ্রমিকদের নির্দিষ্ট আয় ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়টি বিবেচনা করে হয়তো তাদের রেশন কার্ডের অন্তর্ভুক্ত করা যায় কিনা সেটি দেখতে হবে। সেই সাথে ব্যাংক বা আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা আছে তাদেরকেও যৌথভাবে এড়িয়ে আসতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পোশাক শিল্পের মতো রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য সরকার যে বিশেষ প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সেখান থেকে যেসব শ্রমিক কাজে যোগ দিতে পারেননি তাদের নূণ্যতম জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যেন পরিশোধ করে কারখানার মালিকরা।