পোশাকসহ রপ্তানি খাতে উৎসে কর কমল এনবিআরের আদেশ


প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৯
তৈরি পোশাকসহ রপ্তানিমুখী সব খাতে উৎসে কর কমানো হয়েছে। আগে এ খাতে উৎসে করহার ১ শতাংশ ছিল। এখন এটি কমিয়ে আগের মতো শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে তৈরি পোশাকসহ স্থানীয় রপ্তানিমুখী শিল্পে করের চাপ কমবে এবং বিশ্ববাজারে এই খাত আরও প্রতিযোগী হবে। কর হ্রাসের এ সুবিধা আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে এক আদেশ জারি করে। গতকাল সোমবার থেকে আদেশ কার্যকর হয়েছে। বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ রপ্তানি খাতের অন্যান্য সংগঠনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উৎসে কর কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

রপ্তানিকারকরা দাবি করেছেন, ১ জুলাই থেকে যেন উৎসে কর কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। গত জুলাই থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্পে এক শতাংশ উৎসে কর বলবৎ ছিল। শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ হার কার্যকর হলে ১০০ টাকা রপ্তানি আয়ের জন্য কর দিতে হবে ২৫ পয়সা, যা আগে দিতে হতো ১ টাকা। অর্থাৎ আগের চেয়ে করহার এক-চতুর্থাংশ কমল।

এনবিআর সূত্র বলেছে, কর কমানোর ফলে সম্ভাব্য রাজস্ব আয় কম হবে প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা। মূলত পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানি খাতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে কর ছাড় দেওয়া হয়। ইপিবির হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর) রপ্তানি আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমে গেছে। এতে উদ্বিগ্ন রপ্তানিকারকরা।

পোশাক ও রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক উৎসে কর কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। সমকালকে তিনি বলেন, কর্মসংস্থানের বিবেচনায় তৈরি পোশাক হচ্ছে সবচেয়ে বড় খাত। কাজেই অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে এ খাতের টেকসই উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, অতীতে দেখা যায়, উৎসে কর কমানোর আদেশ যখনই দেওয়া হয়েছে, তা জুলাই থেকেই কার্যকর ধরা হতো। রপ্তানি খাতে বিদ্যমান কঠিন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই থেকে এটি কার্যকর হলে ভালো হবে। দেশের রপ্তানি আয়ের ৭৮ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে।

জানা যায়, পোশাকসহ অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পে প্রথম দফায় উৎসে কর কমানো হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরে। তখন শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। গত বছরের ডিসেম্বর থেকে পোশাক খাতে নতুন বেতন কাঠামো শুরু হয়। পোশাক মালিকদের দাবি ছিল, শ্রমিকদের বর্ধিত মজুরির কারণে তাদের ওপর চাপ বেড়েছে। কর কমানো না হলে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তখন দ্বিতীয় দফায় উৎসে করহার কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে সমতা আনতে অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্পে একই হারে করহার নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থবছরের বাজেটে (২০১৯-২০) এ খাতে উৎসে কর এক শতাংশ করা হয়। এতে চাপে পড়ে যান রপ্তানিকারকরা। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আবারও কর কমানোর দাবি জানান তারা।