কাগজ প্রতিবেদক : তৈরি পোশাক শিল্পে দুর্ঘটনার পরিমাণ কমলেও ২০১৮ সালে এ খাতের শ্রমিকদের উপর সহিংসতার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৮ সালে দুর্ঘটনায় ৩ জন শ্রমিক নিহত ও ১৮ জন শ্রমিক আহত হন। সহিংসতার ১১০টি ঘটনার মধ্যে ২৬ টি নির্যাতন, ২১ টি হত্যা, ১১টি ধর্ষণ এবং ৯টি গণধর্ষণের মতো ঘটনা রয়েছে। এছাড়া ২০১৮ সালে শুধু পোশাক শিল্প খাতে ১২৩ টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে এবং এতে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ২৯৮ জন শ্রমিক। শুধু মাত্র বকেয়া বেতন আদায়ের দাবীতেই ৫৪ টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও শ্রমিক মৃত্যু, বিনা নোটিসে কারখানা বন্ধ, কারখানা পুণরায় চালু, ন্যায্য মজুরি ও শ্রম অধিকার আদায় করার দাবীতেও শ্রম অসন্তোষ দেখা দেয়।
ইন্টারন্যাশনাল কোমেমরেশন ডে উপলক্ষে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিল্স) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিল্সের উদ্যোগে জাতীয় পর্যায়ের সংবাদপত্রসমুহে ২০১৮ সালে প্রকাশিত শোভন কাজ, কর্মক্ষেত্র দুর্ঘটনা ও সহিংসতায় শ্রমিক হতাহতের সংবাদ ভিত্তিক সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিলস্রে যুগ্ম মহাসচিব ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান। সভাপতিত্ব করেন ভাইস চেয়ারম্যান শুক্কুর মাহমুদ। অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রপ্তানি আয়ের অন্যতম উৎস পোশাক শিল্প। কিন্তু গার্মেন্টস্রে সাব কন্ট্রাক্ট কারখানার শ্রমিকরা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করছেন। অনেক কারখানার অবকাঠামোগত পরিবর্তন হলেও ভেতরের কাজের পরিবেশের পরিবর্তন অনেকাংশে অপরিবর্তনীয়। এই খাতের ২২ শতাংশ নারী শ্রমিককে এখনও শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। এই নির্যাতনের পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা যেমন বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পর্যাপ্ত আলো বাতাসের অভাব, প্রতিকূল পরিবেশে ইত্যাদি শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রকে ঝুঁকিপুর্ণ করে তুলছে।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনা পরবর্তী অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল শ্রম আইন সংশোধন। তবে বর্তমান সংশোধনীতে শ্রমিক স্বার্থের যথাযথ প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করা হয়। ইপিজেড আইনের কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, একই দেশে দুটি শ্রম আইন থাকা সমীচিন নয়।
তৈরী পোশাক শিল্পের ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান বক্তারা। এছাড়া পোশাক শ্রমিকদের যে ডাটাবেইজ করা হয়েছে তা বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ’র আওতায় না রেখে সরকারের অধীনে রাখার দাবী জানানো হয়।