নিজস্ব প্রতিবেদক ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় টিকে থাকতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। সেই হিসেবে দেশের শিল্প-কারখানাগুলোয় দ্রুত বাড়ছে এর ব্যবহার। তবে প্রযুক্তির আধুনিকায়নে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে দেশের তৈরি পোশাক কারখানা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চার দিনব্যাপী পোশাক খাতের যন্ত্রপাতি এবং অনুসঙ্গের প্রদর্শনী ঘুরে এমনটাই জানা গেল। এর আগে সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রদর্শনীতে কথা হয়, লিশুই স্যুয়িং মেশিনের পরিচালক ল্যারি লিনের সঙ্গে। চীনের এই প্রতিষ্ঠান পোশাক খাতের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সরঞ্জাম নিয়ে অংশ নিয়েছে এই মেলায়।
কোন ধরনের মেশিন নিয়ে প্রদর্শন করছে এবং বাংলাদেশ এর চাহিদা সম্পর্কে জানতে চাইলে ল্যারি তাঁদের প্রতিষ্ঠানের তৈরি অত্যাধুনিক পকেট সেটার (ঈগল স্পেশাল ব্র্যান্ড) দেখালেন। এই মেশিনে দিয়ে শাট, প্যান্ট বা গেঞ্জিতে মুহূর্তেই পকেট সেলাই হয়ে যায়। ল্যারি জানান, এক মিনিটে প্রায় ১২টি পকেট এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সেলাই করা যায়। এটা সাশ্রয়ী, নিখুঁত এবং কম সময় ও শ্রমিক দিয়ে কাজ করা যায় বলে বেশ জনপ্রিয়।
প্রদর্শনী হলের কিছু দূর এগোতেই দেখা যায়, একটি স্টলে মানুষের বেশ ভিড়। মুগ্ধ হয়ে দেখছেন, কিভাবে লোগো হিট মেশিন দিয়ে দ্রুত পোশাকে ছাপানো হয়। তাইওয়ানের ওয়াসিঙ ইলেকট্রিক করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান এই যন্ত্রটি নিয়ে এসেছে প্রদর্শনীতে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা জ্যাক জানান, এটি অটোমেটিক হিট প্রেস মেশিন। এটি খুব দ্রুত এবং নিখুঁতভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেবেল, লোগোর ফিডিং মেশিন। জ্বালানিসাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব। এই ধরনের মেশিনের বিশ্ববাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। আর এই লোগো হিটারের বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান আমাদের ভোক্তা আছে।
মেলায় আয়োজক আসক ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান বলেন, বিশ্ববাজারে এই দেশের পোশাকের বেশ কদর বাড়ছে। ফলে দেশের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির চাহিদাও বাড়ছে। প্রতিবছরই আমাদের প্রদর্শনীর আকার বাড়ছে।
এবারের আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে মেশিনারি, ইয়ার্ন অ্যান্ড ফ্যাব্রিকস, গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ এবং প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিনারি অ্যান্ড সাপোর্ট সার্ভিস নিয়ে প্রদর্শনী চারটির আয়োজন করা হয়েছে। ২৪টি দেশের ৪৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে।
বছরের মাঝামাঝিতে পূর্বাচলের স্থায়ী প্রদর্শনীকেন্দ্র : চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে পূর্বাচলের স্থায়ী প্রদর্শনীকেন্দ্রে বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ফলে বড় পরিসরে এই ধরনের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলো আয়োজন করতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই সারা বছর আমাদের নিজস্ব স্থায়ী প্রদর্শনীকেন্দ্রটি ব্যবহার হোক। একই সঙ্গে আগামী বছর থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্থায়ী প্রদর্শনীকেন্দ্র করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগে আমি চাই সারা বছর আপনাদের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সেখানে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন করুক।’
এ সময় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ড. রুবানা হক, মেলার কো-অর্গানাইজার এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক নন্দ গোপাল কে ও জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান জাকারিয়া ভূইয়াসহ পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।