নিজস্ব প্রতিবেদক | ১৬ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র চাপে কারখানা সংক্রান্ত তদারকি বাংলাদেশের আইনেই হবে বলে মেনে নিয়েছে অ্যাকর্ড। আগে নিজেদের মতো করে তদারকি করত ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড। এখন সেটা আর হবে না। কারখানার সংস্কার তদারকিতে নতুন প্ল্যাটফর্ম আরএমজি সাসটেইনেবল কাউন্সিলের (আরএসসি) কার্যক্রম চলবে এই নীতির ভিত্তিতেই। আরএসসির বড় অংশীদার ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড এবং পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ এ বিষয়ে একমত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুই পক্ষের এক যৌথ বিবৃতির কথা জানানো হয়েছে অ্যাকর্ডের পক্ষ থেকে। আরএসসির কার্যক্রম নীতি প্রণয়নবিষয়ক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। পোশাক খাতের সংস্কার নীতিমালার কথা শ্রম আইনে বলা হয়েছে। এছাড়া কারখানা ভবনের কাঠামো সংক্রান্ত বিধি-বিধান আছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে (বিএনবিসি)।
বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, অ্যাকর্ড বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করবে। কিন্তু পোশাক কারখানার সংস্কার তদারকি হবে আরএসসির মাধ্যমে। এটি আমাদের দ্বারা গঠিত একটি জাতীয় সহযোগী কমিটি, যেখানে ব্র্যান্ড, ইউনিয়ন এবং শিল্পকারখানাগুলো পর্যবেক্ষণের জন্য একত্রিত হবে।
তিনি বলেন, বিজিএমইএ ও অ্যাকর্ড সম্মত হয়েছে দেশি বিদ্যমান আইনেই কারখানার সংস্কার কার্যক্রম তদারকি হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অ্যাকর্ডের লিখিত বিভিন্ন পরামর্শ এবং সংক্রান্ত নীতিমালা আরএসসিকে স্থানান্তর করা হবে। দুই পক্ষ সংস্কার তদারকিতে সব ধরনের স্বচ্ছতার বিষয়টি মেনে চলবে। কারখানা পরিদর্শনের ফলাফল প্রকাশ করা হবে সবার জন্য। অ্যাকর্ডের অধীনে থাকা কারখানাগুলোর সংস্কারকাজ আরএসসির অধীনে চলমান থাকবে। সব ধরনের স্বাধীনতাসহ আরএসসির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে এবং তিনি স্বাধীনভাবে তার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। কারখানা মালিক, ব্র্যান্ড ও শ্রমিক প্রতিনিধির সমানসংখ্যক প্রতিনিধি থাকবেন আরএসসিতে। ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসের পরিপ্রেক্ষিতে এ দেশের পোশাক কারখানার সংস্কার তদারকি শুরু করেন ক্রেতারা। ইউরোপের অ্যাকর্ড এবং আমেরিকার অ্যালায়েন্স ৫ বছর মেয়াদ শেষে বর্ধিত মেয়াদে তাদের কার্যক্রম শেষ করেছে। তবে অতিরিক্ত আরও এক বছর সময় নিয়েছে অ্যাকর্ড। অ্যাকর্ড এবং অন্যান্য ক্রেতা প্রতিনিধি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ প্রতিনিধিদের নিয়ে আরএসসি গঠন পক্রিয়া চলছে। এতদিন অ্যাকর্ডের কার্যক্রম পরিচালিত হতো নেদারল্যান্ডসের আইনের ভিত্তিতে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। দফায় দফায় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আরএসসিতে যোগদান এবং স্থানীয় আইনি কাঠামোয় কাজ করতে সম্মত হয় অ্যাকর্ড।